এই ব্লগটি সন্ধান করুন

কাব্যগ্রন্থ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
কাব্যগ্রন্থ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

রবিবার, ৩০ আগস্ট, ২০২০

যে আকাশটা বিক্রি হয়নি এখনো

 


উৎসর্গ:


যে আকাশ গুলো বিক্রি হয় না কোনদিন।যে  সব তারা গুনে রাখার রাত্রি গুলো ভীষণ একান্ত  তাদের দিলাম 










কিছু কথা


একদিন লিখেছিলাম 

“আমাকে ভুলে যেও আগমনীর কোনো গানে ...

আমাকে পাবে না কোনোদিন কোনো 

                বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে...”

                                                             (কাব্যগ্রন্থ: এবং ও তারপর )

হ্যাঁ ! সত্যি আমাকে আর কেউ কোনোদিন পাবে না কোনো বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে।  কেন এর প্রশ্নের উত্তর গুলো না হয় কোনো একদিন দেব ,হয়তো বা এখনই পাবেন অনেক উত্তর ।

“যে আকাশটা বিক্রি হয়নি কোনো দিন” হঠাৎই জন্ম নিল ,এই লোকডাউন বন্ধুহীন সময়ে একাকী ব্যাকনিতে বসে বসে রোজ রাত গুনতে গুনতে যে সব কথার জন্ম নিল তাদের একটা রূপ।রূপক। হ্যাঁ এইখানে প্রতিটি লেখাই এক একটা রূপক লেখা ,সহজ সরল শব্দ দিয়ে অনেক কিছুকে তুলে ধরাবার চেষ্টা মাত্র।চোখের সামনে যা কিছু দেখতে পাই তাকে আরো ভালো করে দেখা ,আরো একটু নিজেকে জানা ,নিজেকে চেনা,আর একটু ভালো থাকা।

তবুও কি ভালো থাকা হয় ? এসব প্রশ্নের উত্তর গুলোকে খুঁজে খুঁজে হঠাৎ ঘুম চলে আসার মুহুর্ত গুলোই দামি।।



 





  


   মূল্য: একবার ভুল করে পড়ে দেখবেন প্লিজ 















এইখানে যা আছে




এক.  যে আকাশটা বিক্রি হয়নি এখনো 

দুই. রোজকার জমতে থাকা কিছু কথা 

তিন. জীবনের কিছু অভিজ্ঞতার কথা 

চার. বিশেষ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা 














যে আকাশটা এখনো বিক্রি হয়নি


(১)


রাত কেটে যায় নিয়মমাফিক ,

স্বপ্নরা নেমে আসে জানালায়


চোখে চোখ রাখলেই বুঝি ভালোবাসা হয়?

প্রজাপতিরাও আসলে রেশমকীট,সুতোয় সুতোয়

বুনে রাখা হয় যত শীতের সোয়েটার ...


রাস্তার মোড়ে  ট্রাফিক পুলিশটাও ঘুমিয়ে পড়ে।

শুধু তারারা যে যার মত করে চোখ রাঙায়।।


সব চোখে ঘুম নেমে এলে  চোখ যেমন রাতপাখি,

নদীর সাথে কথা হয়নি আমার হাজার বছর...,


ওখানে মন খারাপিরা চুপ করে থাকে শুধু।।






                         (২)


মাস শেষ হতে না হতে আমাদের

ডাল আলু সেদ্ধ ভাতের দিন শুরু হয়ে যায়।

হিসাব খাতা উল্টে পাল্টে দেখি ,নুন আনতে

পান্তা ফুরোনোর গল্প গুলো।


ঘুমাবো বলে সেই একই গান বাজে শ-একবার,

ঘুম আসতে আসতে ভোরের পাখিদের চোখ রাঙানি।

ওসব জড়িয়ে আমাকে কোনোদিন কাঁদে না ।।


কথারা ফুরিয়ে এলেই চশমার ধুলো ঝেড়ে নিই

ঈশান থেকে নৈঋতে হেঁটে যায় ছায়াপথ।।



তারপর চুপ করে দেখি এক একটা মুখ ,এক একটা ছায়া

এক একটা ছায়া এক একটা নস্টালজিয়া…



নদীর কাছে গিয়ে কেটে যায় ঘন্টার পর ঘন্টা ।





                                   (৩)


সিগারেটটা শেষ না পর্যন্ত আমি ব্যালকনিতে বসে থাকি।

আলো গুলো নিভে যায়।সাইরেন বেজে ওঠে।

পাহাড়ি নদীর উপর চাঁদ-আলো সুতো মতো।।


চোখে কাজল পড়লেই তোমাকে যেমন মানায়

আমাকে মন খারাপিতে।।


রাতের হিসেব রাখতে নেই।

দেশ ভাগ হলে ইমিগ্রেশন পেরোতেই হয় বুঝি?


মানচিত্র ধরে এগিয়ে চলেছে যেভাবে জোনাকিদের পাড়া,

বালিশ-কান্না বৃষ্টির মত।।



ছুঁয়ে ছুঁয়ে দেখি ..চোখ।









(২৫.১)


শ্রাবণ চলে যাবার পর পরই তুলো তুলো মেঘ।

পূজো পূজো গন্ধ লেগে থাকত হাটখোলা।

মূর্তিতে চোখ ফুটানো দেখতে যেতাম স্কুল পালিয়ে।।


খড়ি মাটি দিয়ে রং করা সাওতালপাড়ায় খেঁজুড়ের রস

খেতে যেত যেসব দামাল ছেলের দল

আমি জানালা দিয়ে দেখতাম ,হলদে শাড়ির সবুজ পার।


শীতের রাতে তারারা বড্ড বেশি ভিড় জমায়

চাঁদমাখা আলোয় তোমাকে দেখতে চেয়ে

প্রায় থমকে দিত ঈশান কোণে প্রশ্ন চিন্হটা।।


তারপর তুমি চলে যেতেই বসন্তকাল আসে

পাতা ঝরার দিনে,শিমুল ফুল তুলে রাখি দু একটা।।










গামছা


স্নান সেরে নিয়ে,জানালার কাছে বসে আছি।

কেউ নেই কোথাও,ফাঁকা পরে আছে রাস্তা,শহর।।


আমাদের বিলে শাপলা ফুটত তখন,

হেলেঞ্চা শাকে শুকনো লঙ্কা আর রসুন দিয়ে বাটা।।

এক পেট খেয়ে নিতাম।।


আসলে চোখের মত সত্যি আর কিছু নেই পৃথিবীতে।

রোদে স্নান সেরে নিয়ে গিরগিটিদের ভাতঘুম

সহজেই দেখা যায় ,চশমা গুলো ভেঙে ফেললে।।


ঘামের গন্ধটা পারফিউমে যায় না ।

যেভাবে কবিতারা অসহায় হয়ে পড়ে

বুলেটের উস্কানিতে।


স্নান সেরে নিয়ে গা মুছে নেয় রাষ্ট্র।।






বড়ো হতে হতেই হঠাৎ


বাবার সুগারটা বেড়েছে,সঙ্গে হাই পেসার।


বোন আঠারো ছুঁই ছুঁই।মায়ের লেগে থাকে গ্যাস অম্বল,কোমরের ব্যাথা।।


চার পাঁচটা পরীক্ষা দিলাম।ফল প্রকাশ হলো না।।


ব্যাংকের লোন।সুদে রোজ বাড়ে।মুকুব হয় না।।


ক্লাসের পর স্কুল ছুটি হলেই আড্ডারা কমে আসে।বান্ধবীদের ওড়নায় সদ্য ভেজা মাঠের ধান জমি।।


হঠাৎ বড় হয়ে যাই তারপর

আকাশ ছুঁই ছুঁই উঁচু মাথা,

মুদিখানার ফর্দ্দি নিয়ে ভয়ে ভয়ে পথ হাঁটি...।










সকাল


গবর ঘুঁটে দিতে দিতে মা বলল,হাত মুখ ধুয়ে

নুন আর পান্তা ভাত খেয়ে নিতে।।


পেঁয়াজের খোসা ছাড়িয়ে রাখি।বাবা কোদাল নিয়ে

ধান জমির আলে ছাঁচ দেয় ।।


হাঁসদুটো পুকুরে গুগুলি খুঁজতে থাকে।


রান্না ঘর থেকে বোন বলে আজও নুন নেই।

পান্তা খাবো কিসে?


আমার বিছানায় তখন মশারির দড়ি খুলে দিয়ে

বোন জল ঝাপটা দেয় ।


আমার ঘুম ভাঙে ,কিন্তু ঘুম তবুও যায় না ?






ব্যালকনি


সেভাবে আর বসা হয় না গাছের নিচে।

জল পোড়া দিয়ে জ্বর সেরে যায়।


মাটির রাস্তাটায় ভিজে মাটির গন্ধ।

ঘাসেদের হাসি দেখে,পায়ে লাল রঙের আলতা পড়ুক রাই কিশোরী।।

ধান দুব্বা দিয়ে পুষে রাখা আছে কথা।অভিমান।।


বৃষ্টিদের মত ঝুঁকি নিতে আমি পারি না।

বাজারের ব্যাগে আধা কিলো আলু আর পেয়াঁজ নিয়ে ফেরত আসি।


মেঘ করে ,আকাশ ভাঙে,পাড়ার মোড়ে ভিড় হয়।

আত্মীয় স্বজন বাড়িতে আসে যে যার মতো, চলে যায়।


আমি চুপ করে দেখি ,শুধু আমাকে আর দেখি না।।








কেউ ভালো নেই


গণতন্ত্র বলতে শুধু ভোটাভুটি।রাস্তায় পড়ে থাকে লাশ।

চোখেতে চশমা আটা সবার,স্তুতিকার।সর্বনাশ।


হারকাটা গলিতে দুটো মাতাল খিস্তি মেরে চলে যায়

ডাস্টবিনে পরে থাকে মানচিত্র।


এরচেয়ে চোখের মনি বেড়ে করে ফেলা হউক।

অন্ধ করে দেওয়া হোক ,পুলিশ আর নিউজ তখন

আমার গলিত পচা শরীর নিয়ে রাজনীতির দাদামা বাজাবে।।


আমি হেঁটে গেছি পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে, মানুষ নেই,গাছপালা নেই,আছে শুধু চিৎকার।।

আছে জীবন্ত সব লাশদের মৎস্যানায়।

কেউ ভালো নেই ।পৃথিবী ভালো নেই ।

ভাইরাস বিপ্লবে...।।







খরচ


বিছানায় ছড়িয়ে রাখছি শরীরটাকে,

যেভাবে আবহাওয়া বদলেছে।বন্ধুহীন।


যেভাবে পৃথিবীকে কাঁদতে দেখেছি,বৃষ্টির দাগে

জামাটা ভিজে গেছে ,এক শ্রাবণ,


তুমি শব্দ শুনে সরে সরে গেছ।



আমার,

পকেটে দু আনা রেখে বিরিয়ানির স্বপ্ন গুলো সত্যি'ই।


কবিতা লাশ যেমন পাওয়া যায় মাঝ রাতে...

তুমি পড়েও দেখানো কোনোদিন ।।









যেভাবে কাটছে দিন


জানালা খুলে দিলেই,সূর্যের আলো।জলখাবারে চা আর মেরি বিস্কুট।


সিগারেট জ্বলতে থাকে।বই খাতা তুলে রাখি চলো।

বিছানায় ঘুম লেগে থাক,ক্লান্তিহীন।


স্নান খাওয়া নেই।


উদ্ভিদের স্লোগানে বৃষ্টি হয়নি কোনোদিন পৃথিবীতে।।







ভাত ঘুমের মানচিত্র


স্নান সেরে নিয়েই আলগা করে দিচ্ছি শরীর।

চোখে ভিজে গেলেই বোঝা যায় জলের দাম।

বালিশ বোঝে না।


শহরে পর পর হচ্ছে খুন,দায়ী কেউ নিচ্ছে না,

বাসীপচা শরীরেই তো মাছিদের গণআন্দোলন।


রাষ্ট্রকে বলে দিও

কারো মৃত্যুতে এখানে মোমবাতি আর জ্বলবে না।


আসলে  চুমুতে প্রেমিক প্রেমিক

ফেরোমেন-ব্যারিকেট।








বন্ধু


ব্যালকনিতে চাঁদ নেমে আসে সন্ধের পর,

তারা গুনে শেষ করতে পারিনি আজও।।


স্টেশনে বসে আছি,একটার পর একটা ট্রেন চলে যায়,

চায়ের কাপে বিস্কুটটা নুয়ে পরে,চুমুক দিতে দিতে।।

বিকেল কিনতে যাবি আমার সাথে?


মনে পড়ে ,তালের রস চুরি করে খেতে গিয়ে

ধরা পড়েছিলাম,টিল ছুড়ে মাটির হাঁড়ি ভাঙ্গা।।


ওসব কথা বাদ দিলাম,অফিস ফেরৎ চোখে

ঘুম ঘুম ভায়োলিন হবি ?


বৃষ্টি মত ভিজিয়ে যাক উঠোনের যত ঘাস








অভ্যেস


প্রতিটি অফিস ফেরত চোখে যে ক্লান্তি গুলো থাকে

আমি জাহাজ ভেবে আঙ্গুল নাড়াই।


ডালভাতের মতেই দিনগুলো গিলে খেতে থাকে অপেক্ষারা,সিজোফেনিক জাবর।।


আস্তিনের উপর দু একটা কাঠগোলাপ।

ছড়িয়ে ছিটিয়ে পরে থাকে দিনযাপনের ক্যাক্যাফোনিরা।


আঙ্গুল দিয়ে ঘেঁটে দিতেই চুপচাপ দুধের ফেনা,

পৃথিবীর মানচিত্রগ্রাস করে বেশ ঘুম দেয়।।


ভিনিগার দিয়ে দু একটা রসগোল্লা খেয়ে ফেলি,

আর রোজকার নিয়মমাফিক না মেলা অঙ্কগুলোকে

ফ্লেমিং প্যারাডক্স ভেবে ফ্লুরাজেপাম খেয়েনি অনায়াসে।।








পাঁচটাকার গল্প


চোখ বেঁধে দাও আমার রুমালে রুমালে,

পকেটে হাত রেখে তাও বলে দিতে পারি

আমার পাঁচসিকের মস্তানি।


বাবার পকেটে হাতড়ে খুঁজে বের করা খুচরো

টাকায় তোমায় গোলাপ তোড়া কিনে দেবো সত্যি।

আঙ্গুল নেড়ে তুমি ঘুড়ি ওড়াও,


দেয়াল ঘড়ির কাঁটায় যেমন তুমি লেগে আছো,

চোখে মুখে ঘাম ভেজা রুমালের মত।


দিন ফুরিয়ে আসে ইলোরার ভাস্কর্যের মত।










কাগজ


মগজের ভিতর চৌকো এঁকে দিয়ে

ব্যাঙের শীত ঘুম,চোখ বুজে আসে।


ঘরবাড়ি ভেঙে ফেলে ,বালিতে লিখে দিলাম তোমার নাম,

আমাকে খুঁজে পাবে না,শালিকের ডাকে ,

"আমি ওবেলার ডাল ভাতে ফুরিয়ে গেছি"


বোতাম সেলাই করে ঝুলে থাকে অফিসজামা,

সর্বনাম যেমন ভাবে বিশেষণ হতে পারে না।


তুই থেকে তুমি হতে হতে

আপনাকে দূর থেকে চেয়েছি স্বর্ণলতা।।











মেঘেদের দপ্তর থেকে


বিপদসীমা ,এই জোছনা,সন্ধ্যাবেলা ,বুলেট মুখী,

চশমা আটা,ব্যালকনিমন,সামলে রাখি ।

মৃত মানুষ,দশটাকা ঘুষ ,কিনছি যে দেশ ,

হিসেব খাতা,উল্টে দেখা, দিনের খাবার ,হচ্ছে যে শেষ।।


বৃষ্টিকে মন ,ছুটির খাতায় গুনছে এ দিন

কান্না গিলে ,খাচ্ছি তো বেশ,চুপ ভায়োলিন,

লাভার মত ,ফুটছে যত, আফসোস আর কতদিন?

স্বপ্ন নিথর, ঠান্ডা পাথর,হিসেব কঠিন ।।


পেরোচ্ছি রাত ,পুড়ছে যে মন হালকা আঁচে,অসুখ বাড়ে

একলা হবার ,দিনের খাবার, ঝরে রাতে,এ বন্দরে,

কেউ থাকে না ,থাকবে না কেউ ,শেষের বেলায়,

মেঘের শরীর ,চোখ স্থির, চাঁদ ডুবে যায় ...


ঘুম পেয়ে যাক,আমার এ মন,ভীষণ জ্বরে,

একটি রুমাল,ভিজছে না চোখ,এ কবরে।।






একটি আত্মহত্যার লেখা


চোখ বুজে আসছে আমার ,প্লিজ ঘুমাতে দাও।

ঘুমের ভিতর দিয়ে  শূন্যহাঁড়িতে জল ঢেলে মা

ঢকঢক করে এক পেট খেয়ে নেয় রাতের খাবার।।


জানালা খুলে দিতেই বাবার দেওয়া নতুন সাইকেল

বহু দূর যেতে হবে ,প্লিজ  সামনে থেকে সরে যাও।


ওই দূরে  কুকুরটা কেন ওমন ডেকে যাচ্ছে ,প্লিজ ওকে থামান ,

তিস্তার তুমি একটু থেমে যেত পারো প্লিজ

পাথর কাটিয়ে জল পেরোনোর দিন শেষ।


ল্যাম্পপোস্ট তুমি এবার একটু নিভে যাবে প্লিজ

আলোতে ছায়ারা বেশি দেখা যায় ,

ট্যাফিক পুলিশটা ঝিমুচ্ছে ,ও দেখতে পাবে না কিছু।


চাঁদটাও মেঘে ঢেকে গেছে ,ও দেখতে পাবে না ।

বৃষ্টি তুমি আসবে একবার প্লিজ !

ক্লান্তি গুলো ধুয়ে দাও আর একবার


আমাকে ঘুমাতে দাও প্লিজ

পিছুটান রাখতে নেই কোনোদিন

তোমরা বেকার ডেকে যাচ্ছ আমায়...

আমতলা,হাটখোলা পুকুর পাড়


পুকুর পাড়ে বসে কৈ তোমায় তো কোনোদিন

কথা বলতে দেখিনি ,

আসলে মানুষের একটা সময় কথা বলার মতো

লোক কমে যায়।


আমাকে ঘুমাতে দাও... প্লিজ

















ঘুমের কলোনি থেকে


দুটো শাপলা তুলে এনেছি পানাপুকুর থেকে।

বুক ছুঁই ছুঁই জল ,চেং আর শাটি মাছের ভাসা বড়শি।

কেঁচোদের কলোনি পেরিয়ে কাঁচা মরিচ আর লঙ্কা বাটা

পান্তা ভাতের জল ফেলতে নেই ,চুমুক দিয়ে খেতে হয়।


দু একটা হিসাব বাকি এখনো,

কে কত পেলো কে নিলো সব কিছুর

তারপর না হয় দোকান গুছিয়ে নেওয়া যাবে ।


আট আনা খরচ করে একটা রাত কিনলাম তারপর

শুয়ে শুয়ে কেটে যাবে রাত্রি গুলো

চোখেদের বড় বিশ্রাম দরকার ।


ঘুমের ভিতর থেকে খিদেয় অম্বল হয়ে গেছে পাকস্থলী তারপর..







বোবা মানুষের কথা


ধুলো ঝেরে রাখলুম আলমারীটায়।

বইখাতায় উঁই পোকাদের গোছানো সংসার।।


আরশোলা গুলো ডাইরিটার পাতা খেতে গিয়ে থমকে যায়নি,

থেকে যায়নি যত শব্দ লেখা ছিল ভুলভাল,

আলু মাখা দিয়ে ভাত মেখে রাখি সন্ধে হলেই যেমন।


আসলে শুধু "কথা বলা হয়নি বলে" কেউ একবারও

গিটারের ছটা তারে তুলেনি কবীর সুমনের গান।


সব ভাঙ্গার শব্দ শুনেছি ,শুধু হৃদয় ভাঙ্গার শব্দ শুনিনি কোনোদিন।












বোকা মানুষের লেখা


ঘুম ভেঙে গিয়ে টুককরে  আয়ানার সামনে দাঁড়িয়ে পড়ি,

চুমু খেতে ইচ্ছে হলেও খেতে পারি না,কেমন নিরামিষ

নিরামিষ লাগে।

এরচেয়ে জলঝাপটা মুখে দিয়ে নি।


সকাল বলতে আদা-চা নুয়ে পরে বিস্কুট।

তোমার গেরস্থলীর গোবরজল উঠোন ছড়ানো

কলেরপাড়ে রাতের এঁটো বাসনপত্র ।


এসবের বাইরেও একটা পৃথিবীর রান্নাঘর

মগজের ভিতর টকবক করে ফুটছে পুরোনো চাল

স্নায়ুতে স্নায়ুতে বিরিয়ানি আর ডালভাতের তফাৎ

না বোঝা মানুষের আর্তনাদ।


চোখে চোখ রাখলেই দেখা যায় হাজার জানালার বাড়ি।।










ঘুমের দেশের মেঘ


তোমার চুলে জুঁই ফুলের মালা বেঁধে দেবো।

আমার রাতে ল্যাম্পপোস্ট বিছানা সাজায়

পাহাড়ি নদী।


এক আকাশ মেঘ সাজিয়ে রেখে দেওয়া আছে

তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে যাবার পথ,

ঝিঁঝিঁ পোকাদের পাড়ায় ঘুমের শহর।


রাজ্যপাঠ সেরে নিয়ে ঘর সাজানোর

জন্য যা কিছু দরকার ,মান অভিমান

আর হঠাৎ ভীষণ জড়িয়ে ধরা তোমাকে ,


শুধু তুমি পাহাড়ের গায়ে ছোট্ট একটা ঘর

ঘুমাবার জায়গা রেখে দিও

রাত কেটে গেলে ঘুমিয়ে যাবো।।








চুপ হয়ে যাওয়ায় সময়


দূরের পাহাড়ে কারখানার সাইরেন বেজে উঠুক আজ

যারা বাড়ি ফিরে গেছে তারা আসবে না এপথে

তালা ঝুলিয়ে দেওয়া দরজায়।


আমি রাত্রি গিলে খাচ্ছি রোজ রোজ

রোজ রোজ নিয়ম করে ব্যালকনি আর ছাদ

মেঘ ভিজিয়ে যায় মাঝে মধ্যেই ।


বন্ধুরা কমে আসে দিনে মতোই

আর তুমি স্বপ্নগাছ।


দূর থেকে দাঁড়িয়ে যতটুকু দেখা যায়

ততটুকু নিয়েই দিন গুনে রাখার সময় চলে আসে..আমার






নেশা কেটে যাবার পরেরটুকু


উনুনে তেল ফুটছে তোমার,ইলিশ ভাঁজার গন্ধ।

আমার ডালভাত খেতে ভালো লাগছে না

পকেটে খুচর পয়সার বাহাদুরি।

জলজিরা দিয়া খেতে পাচ্ছে যে কান্না।।


কত শত মানুষ হেটে চলে বুকের উপর।

বৃষ্টিটা সকাল থেকে হচ্ছে ।

তুমি জানালায় বসে চলে যেতে দেখছো আমায়

ফুটপাত হয়ে শুয়ে আছি কলকাতায় ।।


চশমাটা খুঁজে পাচ্ছি না ,চশমাটা কোথায় ?

সুদিন আসবে বলে মানুষ গুলো শুধু মরে যায় !


















সন্ধ্যা হবার পরেরটুকু


হাঁস গুলো পুকুর থেকে ফিরে গেছে,

স্নান সেরে নিয়ে মায়ের সন্ধ্যা প্রদীপ।

বোকা চাঁদ আম বাগনে লুকোচুরি খেলবে বলে এলো।


জোনাকীদের পাড়ায় গেছো কোনোদিন তুমি 

বই খাতা ফেলে?


আলোরা কেমন ফ্যাকাসে হয়ে যায় শীতকাল নেমে আসার সময়

পেঁয়াজ কুচি দিয়ে দু-মুঠো নুনভাত খেয়ে 

লাশেরা স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখে চোখ খুলে।


ল্যাম্পপোস্ট গুলোই জানে একমাত্র অপেক্ষার মানে।।










ঘুমোতে যাবার আগে


জানালা গুলো সব খুলে দিলাম,

পর্দাটা থাক।আড়লে দেখা যাবে।চাঁদ।

সিলিং ফ্যানের আওয়াজটা সয়ে গেছে।।


আগে মা মশারির দড়ি শক্ত করে বেঁধে দিত।

বাবা আলো নেভানোর আগে বই খাতা সরিয়ে

রেখে দিত টেবিলে।মাথায় বালিশ দিত রোজ।


বোন  বোতলে রেখে দিত ঠান্ডা জল।

মা কাঁথা দিত একটা রাতে ঠান্ডা লাগলে যেন ঢাকা নেই।

আমি চোখ বুঝে সবটা দেখতাম,বুঝতাম,আমার ঘুমের আয়োজন।।


এখন মশারি টাঙ্গাই না।বালিশ খুঁজি না।

জলের বোতল মাথার পাশে থাকে না ।

আলো নিভিয়ে চুপ করে থাকি মরার মত।


বেহায়া চাঁদ জানালায় আসে ,ফের চলে যায়।

চোখ বন্ধ করতেই দেখতে পাই

মা বাবা বোন সবাই ঘুমোচ্ছে।।


রোজ রাত কেটে যায় যেন কখন হিসাবে মেলে না....




কিছু ঘোষণার আগে কিছু জীবনের অভিজ্ঞতা রাখলুম

                             (১)


কাউকে ভালোবাসলে বিরক্ত জিনিসটা কোনোদিন আসতে পারে না ,কথা বলা শুরু হলে শেষ হতে চায় না যেন ,যখন কথা কমতে থাকে তখন বোঝা যায় দূরত্ব বাড়ছে ,কোথাও একটা অপর মানুষটার মধ্যে খামতি থেকে যাচ্ছে যেটা আমার প্রথমে বুঝতে পারি না ,কিন্তু ভিতর ভিতর একদিন বাড়তে থাকা সে জ্বর পরমাণু বোমার মত ,বিস্ফোরণ হতেই সব শেষ,আর ভুল শুধরে নেওয়ার  সুযোগ থাকে না।


এইখানে সব থেকে বেশি ইম্পর্টেন্ট হলো সেন্স অফ হিউমার ,কোনো সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে গেলে দুজন মানুষের মধ্যে এই জিনিসটা থাকা উচিত ,নাহলে একটা সময় কেমন যেন হয়ে যায় সম্পর্কে গুলো ,বিকল্প খুঁজে পেলেই প্রতিজ্ঞা আর প্রতিশ্রুতি গুলো কেমন কম দামি হয়ে যায়।


যখন কেউ অভ্যেস হয়ে যায় তার জন্য সবটা সময় প্রস্তুত থাকে ।"কথা বলার সময় নেই " "ব্যস্ত আছি " "সময় দিতে পারি না " এগুলো আসলে এক একটা অজুহাত ,ভালোবাসার মানুষটার সঙ্গে আত্মীক যোগ থাকলে এক মিনিটেও বের করা যায় চাইলে শত ব্যস্ততার মধ্যেও,আর এই এক মিনিটে অনেক কথাই বলে দেওয়া যায় অনায়াসে ।


আসলে এই আত্মীক যোগটাই আসল ,একটি মানুষ অপর মানুষের কথা বলার ধরণ বা তার রিয়াক্ত দেখে বুঝে যেতে হয় ওপর মানুষটার মধ্যে কি চলছে,তখন জাস্ট একটা জড়িয়ে ধরে দেখুন দেখবেন অনেকটা হালকা হবে অপর মানুষটাও এবং নিজেও ।।

এর জন্য সেন্স অফ হিউমার ভীষণ ভাবে প্রয়োজন ।।


এগুলো সব আমার নিজের অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি ,এবার প্রশ্ন তবুও আমি ব্যর্থ কেন ,ওই কথা গুলো ফুরিয়ে যায় ,আসলে কিন্তু কথা ফুরায়নি ,

আমার ভিতরের কি চলছে অপর মানুষটা কোনোদিন বোঝেনি কিংবা আমি বুঝতে পারিনি ,তারপর কথা কমে গেছে ,তবে এখন বুঝতে পারি যে ভুল গুলো কোথায় ছিল ।


ভুল গুলো হওয়ার আগে ভুল গুলো শুধরে নেওয়া প্রয়োজন ।


আরো একটা জিনিস "ভালোবাসার" পরিণতি বিয়ে পর্যন্ত শেষ হয় না ,হতে পারে না ,ভালোবাসার কোনো পরিণতি নেই ,শেষ পর্যন্ত থেকে গিয়েও শেষ হয় না এই "ভালোবাসা'' জিনিসটা ।


আসলে ভালোবাসা হলো সেই সব মুহুর্ত যে সময়ে একসঙ্গে থেকে এক জন আর এক জনের কাছে সব কিছু অনায়াসে বলে দিতে পারতো বা অন্য জন বুঝে যেত ,ভালো থাকার প্রয়োজন গুলো।।


তাই না থাকা বা ব্রেক আপ ভালোবাসায় নেই ,শুধু ভালো থাকার বা ভালো রাখার মুহূর্ত গুলো আছে ।








                                   (২)

যে মানুষটা একবার নিজেকে ভালোবেসে ফেলে ,নিজেকে পেয়ে যায় ,তার আর কাউকে প্রয়োজন হয় না ভালো থাকার জন্য ।


এই গলা ছেড়ে গান গায় হঠাৎ হঠাৎ ,আবার কখনো খামোখা নেচে নেয় একটু কিংবা হেসে উঠে কারণ ছাড়াই ।লোকে ভাবে পাগল ,অথচ নদীর কাছে গিয়ে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা ,কথা বলে নদীর সাথে ,পাহাড় আঁকে মনের ভিতর,জানালায় চুপ করে বসে থাকে রাতের পর রাত।


নিজেকে বারবার আয়ানায় দেখে আর বারবার প্রেমে পড়ে নিজের।


হারাবার ভয় থাকে,অভিমান থাকে না,থাকে শুধু একটা বটগাছ ।সবার সঙ্গে অনায়াসেই মিশে যায় এক নিমেষে ,আবার সবার থেকে দুরেও সরে যায় হঠাৎ ।


নিজেকে ভালো না বাসলে কাউকে ভালোবাসা যায় না ,যেতে পারে না ।





                             (৩)


আমরা যারা লোককে ভীষণ হাসানোর চেষ্টা করি ,মিম share করি কিংবা জ্বালাতে থাকি আসলে দিনের শেষে এরা ভীষণ একা ,এরা শুধু অন্যের কথা মনে দিয়ে শুনে যায় ,নিজের কথা কাউকে কোনোদিন বলতে পারে না ,কারণ এদের কথা শুনে যাবার মতো লোক থাকেই না ,কিংবা বলতে চায় না ,চাইলেও লোককে বিশ্বাস করতে খুব ভয় পায় ।


এরাই সবাইকে নিজে গিয়েই জিগ্যেস করে "কেমন আছিস ?" 

কিন্তু কেউ নিজে থেকে গিয়ে এদের একটা মেসেজ পর্যন্ত করে না ।।


আসলে আমরা প্রত্যেকে দিনের শেষে ভীষণ একা হয়ে যাই ,একা হয়ে যেতে হয়।

বাইরে থেকে কিন্তু মনে হয় না ভিতর ভিতর মৃত প্রায় মানুষটা কোনো দিন কাউকে হাসতে পারে বলে ।।


আসুন না এক বার আমার সবাই সবাইকে জিগ্যেস করি "কেমন আছিস" বলে প্লিজ 

হয়তো কিছুটা ভালো থাকা যেতে পারে কিছুক্ষণ হলেও ।।













কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা মন দিয়ে পড়বেন একটু


১.

রাজপথে কবিদের লাশ পাওয়া যাচ্ছে।মুখে মাস্ক পড়বেন অবশ্যই।


২.

শব্দ চুরি করতে গিয়ে বিখ্যাত হলেন আতশবাজির কোম্পানি।


৩.

মন ভাঙলে ভাঙতে দিন।কাঁচের জিনিস সহজেই ভেঙে যায়।তবে জানলা খুলে রাখুন । বসবেন।।


৪.

রেশন দোকানে মাল আসেনি।গুদাম ঘরে গচ্ছিত চালের বস্তারা নারাজ।।


৫.

প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর গোপণ ভিডিও ফাঁস।এড়িয়ে যাবেন। কিংবা চোখ বন্ধ রাখুন ।।


৬.

রাত জেগে কান্নাকে পাহারা দিন।স্বপ্নরা চুমু খাবেই খাবে।।


৭.

ইনবক্সে সেক্স ভিডিও পাঠিয়ে মোমবাতিরা মিছিল হাঁটবে।।


৮.

নতুন করে ভালোবাসতে যাবেন না,বাঁচতে যাবেন না ,সমাজ বারোভাতারি বলবেই বলবে।


৯.

চশমা খুলতেই মুখোশ গুলো মানুষ হয়ে উঠছে ।


১০.

সাপে আর ব্যাঙের বিয়ে দিয়ে দিন।ডিভোর্স পার্টিতে কব্জি ডুবিয়ে খাবো।।


১১.

রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মামলা করা হলে,রেপ কেসে ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে কিংবা শুট আউট।।


১২.

রাস্তায় ডানদিক দিয়ে হাঁটবেন ,রাস্তাটা পার্টি অফিসের বাপের।


১৩.

ত্রিশূলে কন্ডোম বা কাফনে গীতা রাখলেই সমাজবিরোধী বলে পুড়িয়ে মারা হবে।।


১৪.

আঙ্গুল বেঁকিয়েও ঘি না উঠলে ,বুলেট চালান।।

১৫.

প্রেমিকা বা প্রমিককে চলে দিন ,না ফিরে আসলে "উইরেকা উইরেকা"।।


১৬.

স্বপ্ন গুলোকে ডাইরির পাতায় জমিয়ে রাখুন।খুন হবার আগে পর্যন্ত যত্নে থাকবে।


১৭.

খিদে পেলে খান ,কান্না পেলে ছাদে গিয়ে বসবেন।

বালিশ ভেজাবেন না।বালিশেরও কান্না পায়।।

১৮.

ফেসবুকে একটু গা ঘেঁষে বসুন ,বই বিক্রি হবেই হবে।

১৯.

জানালা গুলো খুলে রেখে ঘুমাবেন।কেউ বসবে বলে...

২০ .

চুপ করে থাকুন ,চুপ হয়ে দেখুন ,সব পরিষ্কার দেখতে পাবেন।।