এই ব্লগটি সন্ধান করুন

ক থা হো ক লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
ক থা হো ক লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৩

সরকারী অনুদান :দেশ দেউলিয়া করার আসল মন্ত্র॥এখনি সময় দেশকে বাঁচবার ,চোর নেতাদের ভোট নয় বারবার(প্রথম পর্ব)


 

লক্ষ্মীভান্ডার ,কন্যাশ্রী ,যুবশ্রী ,ফ্রি রেশন ,ফ্রি আসলে কি পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটি অভিশাপ : 


যদি প্রশ্ন করি আফ্রিকান দেশ ভেনিজুয়েলা ও এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা এই দুটি দেশের মধ্যে মিল কোথায় ? একটাই উত্তর আসে ,দুটো দেশই দেউলিয়া হয়ে গেছে ৷ এবার প্রশ্ন হচ্ছে কেন ? এর একটাই উত্তর "Freebies" বা অনুদান । 99% মানুষ এই অনুদান সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নয় ।ওয়াকিবহাল তো অনেক দূরের কথা লোকে জানেনই না যে এই অনুদান আসলে কি ? আসলেই কি বিনামূল্যে প্রদান করা না কি এর পিছনে আছে অনেক বড় একটি অর্থনৈতিক প্রদান।এক্সপার্টদের অনুসারে যদি ভারতে এই  ভন্ড নেতাদের ভোট কেনার জন্য অনুদান প্রথা যেমন কন্যাশ্রী ,যুবশ্রী ,লক্ষ্মীভান্ডার ,ফ্রী রেশন,ফ্রি বিদ্যু ইত্যাদি চলতে থাকে তবে আগামী 20 থেকে 30 বছরের মধ্যে ভারতের অবস্থা সেরকম হয়ে যাবে ।আর পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা তো হয়ে গেছেই সেটা দেখতেই পাচ্ছেন । এবার অনেকে প্রশ্ন করবেন কেন ?

এর উত্তর আমরা চারটি চ্যাপ্টারে বুজবো 

চ্যাপ্টার:১ 

চলুন আগে ভ্যেনেজুয়েলার কেস স্ট্যাডি করি 

2019 এর তথ্য অনুসারে ভেনেজুয়েলাতে 304 বিলিয়ন ব্যরেল খনিজ তেল সংরক্ষিত আছে যা গোটা পৃথিবীর 17.8% এটি তাকে পৃথিবীর প্রথম স্থানে রাখে ।বলা হয় যে যার যে দেশের কাছে যত বেশি খনিজ তেল আছে সেদেশ তত অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বেশি উন্নত এবং ভৌগোলিক রাজনীতিতে তার তত বেশী আধিপত্য।তবুও হঠাৎ কি হল যে ভেনেজুয়েলা দেউলিয়া হয়ে গেল ? কেন 2017 সালে ওখানকার লোকেদের 64% লোক শুধু মাত্র এক বেলা খেয়ে দিন কাটাত ,লোকেদের কাছে খাবার কেনার মত টাকা ছিল না ,82% লোক দরিদ্র সীমার নীচে চলে গিয়েছিল ? যে দেশ পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী খনীজ তেল সংরক্ষক তার একি হলো ? 




এর কারণ জানতে হলে চলে যেতে হবে ইতিহাসে 1999তে ভেনেজুয়েলায় ওদের নতুন প্রেসিডেন্ট পান হুগো চাওউয়ীস কে পান ,তিনি ভোটের আগে ঘোষণা করেন যে তিন দেশে অর্থনৈতিক সামঞ্জস্য আনবেন ।সে বছরেই তেলের দাম হঠাৎ বেড়ে যায় এতে ভেনেজুয়েলা বেশ টাকা কমায় ,কথা মতো তিনি শুরু করেন বিভিন্ন সামাজিক কাজ ,যেমন বিনামূল্যে ঔষধ, শিক্ষা, রেশন ,বিদ্যুৎ ইত্যাদি এবং কয়েক বছরের মধ্যেই 50% গরীব কমে যায় সে দেশে ।এতে সে দেশের মানুষে খুব খুশি হয়ে যায় ,যেমন এখন পশ্চিমবঙ্গের মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া অনুদানে খুশি কিন্তু এখান থেকেই শুরু হয় আসল কাহিনী । পরবর্তী ইলেকশনে জেতার জন্য তিনি এই প্রথাটি অবলম্বন করে চলেন যাতে লোক খুশি থাকে  এবং ভোটে জিতেও যান । যেহেতু ভ্যেনেজুয়েলা একটি খনিজ তেলে উপর নির্ভরশীল দেশ যদি তেলের দাম কমে যায় তবে সেটা ডিরেক্ট প্রভাব পড়বে তাদের অর্থনৈতিক দিকে ।2013তে হঠাৎ একটি তিনি পরলোকে গমন করেন ,এরপর তার ডানহাত নিকোলাস মাদুরো নতুন প্রেসিডেন্ট হন ,তিনিও অনুদান প্রথা চালু রাখেন যাতে তিনি পরবর্তী ইলেকশনে ভোটে জিতেন ।2014 তে হঠাৎ তেলের দাম পড়তে শুরু করে।2014 তে যেখানে এক ব্যরেল তেলের দাম 100 ডলার ছিল 2016 তে 30 ডলারে পৌঁছে যায়।এরফলে শুরু হয় অর্থনৈতিক মন্দা যা নিকোলাসের কন্ট্রোলের বাইরে চলে ।তা সত্ত্বেও তিনি অনুদান প্রথা  ,খাবার বিতরণ ,বিনামূল্যে ঔষধ, শিক্ষা চালু রাখেন অতিরিক্ত টাকা ছাপার মাধ্যমে এরফলে দেশের অবস্থা আরও আশঙ্কাজনক হয়ে যায় যা ওখানের অর্থনীতি হাইপার ইনফ্লামেশনে চলে যায়।2012 তে যা ছিল 21.07% সেটি 2018 তে গিয়ে 65374.08% এ চলে যায় মাত্র 6 বছরে এটি ভারতের সঙ্গে তুলনা করলে ভারতের ইনফ্লামেশন রেট ছিল 3.43% আমেরিকার ছিল 2.4% ।




 অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে গেছিল যে সেখানকার মানুষের এক কেজি চাল কেনার জন্য 2,20,000 বলিভিয়ার(ভেনেজুয়েলার টাকা) দিতে হত। এটা শুধু মাত্র যে অনুদান প্রথার জন্য হয়েছে তা নয় ,এর সঙ্গে ছিল আমাদের পশ্চিমবঙ্গের তথা ভারতের নেতাদের মত দুর্নীতি।তবে অনুদান প্রথার ছিল সব থেকে বেশি ভূমিকা ।

আসলে "Northing is to be free" কোনো জিনিস বিনামূল্যে হয় না 


(সংক্ষিপ্ত...)


বুধবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৩

ভয় পায় : সুমিত মোদক

 



একটু একটু করে চোখ দুটো নষ্ট হয়ে গেলো ;

তার পর কান দুটো …

নাক তো বহু আগে কাটা পড়েছে , 

সেই রামায়ণ যুগে ;

ঠেকেছে কেবল মস্তিষ্কটুকু ;

মাঝে মাঝে মনে হয় সেটুকু আছে তো !

মাথাটাও কি বিকিয়ে গেলো !


নদী ভাগীরথী , সব জানে ;

আর জানো তুমি …


হেমন্তের রাতে কুয়াশা ঢেকে দিতে থাকে বোধ ;

গর্ভের সন্তানও ভূমিষ্ঠ হতে ভয় পায় ;

আঁতুর ঘরে তবুও তো মাটির প্রদীপ জ্বলে ;

মা জাগে রাত …


মাঝ রাতে করা চিৎকার শুরু করেছে !

করা ভেঙে ফেলছে নদী-বাঁধ !

অসাড় হয়ে মুখের মধ্যে পড়ে থাকা জিভটা

শুরু করে দিয়েছে নড়াচড়া ;


বুকের মধ্যে সাজিয়ে নিচ্ছে কুরুক্ষেত্র প্রান্তর ;

এবার বেজে উঠবে পঞ্চজন্য শঙ্খ ।

দেবাঞ্জন ব্যানার্জি এর এক গুচ্ছ কবিতা

 




ফিরে দেখা

                     


আমার স্বপ্নে তুমি আজও আমার পাশে,

তবু হাজার ডাকেও নেই যে কোনো সাড়া!

      ব্যর্থ কবির স্তব্ধ অভিলাষে,

তুমি মাঝ আকাশের ভিনদেশী এক তারা ।


রংমহলের দরজা আজও খোলা

আজও ফেরায় আলো ঝলমলে ঝাড়বাতি..

আজও তুমি ছাড়া হইনা আপনভোলা,

হয়তো ভাগ্যে আমার চলছে সাড়েসাতি।।


বাঁচিয়ে তুলি ধুলোজমা ক্যানভাস,

শুকনো রঙে স্মৃতির কণা ঝড়ে

তোমার ছবিতে পড়ছে রুদ্ধশ্বাস,

ওই হাসিতেই একরাশ মেঘ সরে।


আজ আলোয় মোড়া পথে আমি একা,

ওই ছুট্টে এসে হাতটা ধরলে তুমি,

আবার তোমার আমার প্রথম সেই দেখা..

সেই চলে যাবে তুমি, কালই তো দশমী।


চশমা 


আলমারির এককোনে ফেলে রাখা চশমায় চেপে বসা ধূলো..

যেনো থাকতে চায় না আর, উগড়ে দিতে চায় জমানো কথাগুলো।

তুলে নিয়ে দেখি তাতে, একপলকের আদরে,

হাজার রঙিন বিকেল আর বেরঙিন প্রজাপতি ওড়ে।

ছুট্টে দেখি বারান্দায়, সরছে ঐ গম্ভীর মেঘগুলো,

ইচ্ছে হয় আমারও, সায় দেয় ঝরাপাতাগুলোও।

মরা গাছেও দেখি ফোটে ফুল, তবু বাতাসের হাহাকার!মিছিমিছি কেন? কেন আজও ওরা নির্বিকার? 

ইচ্ছেনদীর তীরে, আজও থমকে আমি অকারণ

বেরঙিন দুনিয়ায় রঙিন বেলুন ফেরি করাই বারণ ।



না বলা কথা


আমার স্বপ্নগুলো দমকা হওয়ার মতো,

মাঝে মাঝে এসে ঝরাপাতাগুলোকে উড়িয়ে নিয়ে যায়,

ঠিক যেনো আকাশের ঐ বিদ্যুৎের ঝলকানি, এক পলকে এসেই আবার কোথায় পালায়!

বসে বসে ভাবে শুধু আমার মন,

এগুলো বলাই নিষ্প্রয়োজন,

আমার না বলা কথা।

এলো ওরা হনহনিয়ে তেড়ে

বাঁধলো আমার হাত, পা, আমার মুখ,

খাঁচায় বন্দি বাঘের চেয়েও যে হিংস্র,

কেড়ে নিলো আমার বাঁচিয়ে রাখা সুখ।

মাটিতে পড়ে রয়েছি শুধু আমি

সইছি ওদের দেওয়া সব যন্ত্রনা

খাচ্ছে ছিঁড়ে ক্ষুধার্ত সব পশু,

নিজেকে তো আর বাঁচাতে পারলাম না!

থাকলাম না আমি, থাকলো না আমার স্বপ্ন,

জিতলো ওদের নগ্ন বীভৎসতা,

বীরদর্পে থাকলো শুধু ওরা,

আর রইলো বেঁচে আমার না বলা কথা।

যখন লড়ছিলাম ঐ পশুগুলোর সঙ্গে

কেউ শোনেনিতো আমার অসহায় চিৎকার,

আর আজ যখন আমি দূরে, অনেক দূরে

সেই তোমরাই কিনা দিচ্ছ আমায় ধিক্কার!

আমিতো সাধারণ একজন

তাই নির্বিচারে যন্ত্রণা নিয়ে যাই,

আজ আমি আর নেই, পুড়লো আমার দেহ,

বৃষ্টির জলে ধুয়ে গেলো সব ছাই।

এমনি করেই যাচ্ছে চলে সব,

হচ্ছে যতো হিংস্র পশুর শিকার,

আমার তো আজ হাত, পা সব বাঁধা,

তবে তোমরা কেনো এখনও নির্বিকার?

বলছো তোমরা ভুল তো কিছুই নয়,

মেয়েরা কেনো করবে বাচালতা?

জানতাম সব বুঝবে না তো কেউ,

আমাদের সব না বলা কথা।

                


নবাগত


আসিয়াছে দেখো নূতন কুসুম

আনিয়াছে বর্তমানের সুঘ্রাণ

তারে ঝরাইলে পড়ে হারাইবে তুমি, 

ভবিষ্যতের প্রাণ।

সুকঠিন তার সবুজবৃন্ত,

চিরমুক্ত যে দল।

তাহারই মাঝে উজ্জ্বল তেজ,

কোথা আর পাবি বল?

কোমল যে তার দলগুচ্ছ,

মধুর বর্নে রিক্ত,

বিধুর জ্যোৎস্নাস্পর্শে লজ্জায় গুটায়,

হয় শীতল শিশিরে সিক্ত।

সঙ্গীরা সব পাপড়ি মেলিছে

ডাকিতেছে তারে যারা,

প্রভাতরবির আলোর ডাকে

ধীরে ধীরে দেয় সারা।

ধীরে ধীরে দেখো বহিতেছে বায়ু

মাথা দুলায় পত্ররাশি,

হেলাও তোমার ক্ষুদ্র দেহ,

দূরে ঐ রাখাল বাজায় বাঁশি।


চতুস্পার্শ করো সুন্দর,

হও আনন্দে তমোঘ্ন,

বরন করো হে নবাগতকে,

দেখো আগামীর স্বপ্ন।


স্রোতের চোরাস্মৃতি


আজ মুক্ত স্রোতের উজানটানে সব স্মৃতি ভেসে যায়, তবুও কেনো ঢেউগুলো সব চড়ায় ধাক্কা খায়?

পাথর ভর্তি পাড়গুলো আজ নয় আর পঙ্কিল, আকাশের বুক চিড়ে ওড়ে একলা শঙ্খচিল।

নেইতো জোয়ার, শোনা যায় শুধু ভাটার দুঃখের গান, বাণের জলের কান্নায় তাই ভাসে নদীর প্রাণ!

গানদরিয়ায় একলা মাঝি ভাসছে মনের সুখে, ঢেউয়ের বওয়া চোরাবালি জমছে নদীর বুকে।

দিগন্তের শিখরে রামধনু সুতো বাঁধতো নদীর প্রাণ, এখন শুধু জ্বলতে থাকা চিতার পাশে একলা ফকিরের গান।

মুক্ত থাকার জ্বালায় রইলো বন্দি থাকার আশা, দুরন্ত স্রোতের মাঝে আজ শুধুই স্মৃতির যাওয়া আসা।

            

অপরিবর্তিতা:অঞ্জলি দে নন্দী

 





আমি কিছুতেই নিজেকে পাল্টাবুনি।

নিদ্রিতা স্বপনে আমি অতীতের জাল বুনি।

আর কভুই না ফিরে আসা গতদিনের ডাক শুনি।

আহা, কতই না হার্দিক কথোপকথন!

বর্তমানে জাগ্রতা আমি সেই বীজ-স্বপন 

ভবিষ্যতের জন্য দূরদৃষ্টি-মাটিতে করি বপন।

মুদ্রিতা নয়নে আমি এই দৃশ্য স্বপনেই পেলুম -

আগামীর পথ, যে পথে আমি এগিয়ে গেলুম।

সে পথেই আমি অমরত্বের অমৃত খেলুম।

অজানা সম্মুখ-পথ, অজানা তার পরিণতি।

তবুও অদম্য আমার গমন-গতি।

আমি পথপ্রিয়া এক অপরিবর্তিতা পথি।

থামা কাকে বলে, তা তো আমি জানিনি।

কোনও বাধাই যে আমি মানিনি।

কখনও অক্ষমতাকে আমি ভাবনায় আনিনি।

আজন্ম, আমৃত্যু আমি চলছি।

কষ্ট যত দুপদতলে দলছি।

মৃত্যুর পরেও আমি চলব-আমার প্রতিজ্ঞায় বলছি।

শ/সপথের স্ব-পথে আমি অনন্তা-সবিতারূপে জ্বলছি।

বিগলিতা অশেষ-আলো হয়ে গলছি।

আপন গতিতে সফলতায় ফলছি।

মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২৩

মেশকাতুন নাহার

 ইচ্ছের মৃত্যু 


প্রতিদিন কত ইচ্ছেরা নীল প্রজাপতির মতো পাখা মেলে উড়ে বেড়ায়,
ফুলে ফুলে গাছে গাছে,পুলকিত হয়ে আবেশ ছড়ায়। 
প্রস্ফুটিত হওয়ার আগেই কলি টা কখনো ঝরে যায়! 
ইচ্ছে গুলোর মৃত্যু হয় প্রতিনিয়ত নানান প্রতিকূলতায় 
পিষ্ট আহত প্রজাপতি মন কখনো তাঁর ডানা হারায়!
স্বাধীন ভাবে উড়ে চলার  ইচ্ছে গুলো দূর অজানায় অদৃশ্যে গিয়ে মিলায়।

কখনো ইচ্ছে করে গিরির পথ বেয়ে হারিয়ে যাই ঐ সুদূর নীলিমায়, 
মনের অন্তরীক্ষে সপ্তরঙের পাখা মেলে  ইচ্ছেগুলো দোলে হাওয়ায়, 
আকস্মিক দুর্বিষহ ঝটিকা বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত হয়ে ইচ্ছে ডানাগুলো খোয়ায়,
অভিলাষ গুলো বিবর্ণতায় জরাগ্রস্ত হয় মর্মান্তিক যন্ত্রণায়।

হৃদয় উদ্যানে স্বপ্নের বীজ রোপণ করেছি বারেবারে, 
অঙ্কুরিত হওয়ার আগেই দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে অজ্ঞাতসারে।
সহস্রবার রঙ তুলির আঁচড়ে এঁকেছি ছবি ভাবনার ক্যানভাসে, 
সম্মুখে উন্মেষিত হয়নি কখনো অন্তর্ধান হয়েছে দীর্ঘশ্বাসে।

পূর্ণিমা রজনীতে কত যে বিনিদ্র কাটিয়েছি শূন্যতা নিয়ে, 
স্পৃহা সমূহ ভস্মীভূত হয়েছে যাতনা ভরা প্রদাহের অনল জ্বালিয়ে, 
প্রাণচঞ্চল মনকে শান্ত করেছি ইচ্ছেগুলো কে নির্বাসনে পাঠিয়ে,
সুপ্ত আকাঙ্ক্ষার মৃত্যু হয়েছে নেত্রজলের প্লাবনে বালিশের তুলো ভাসিয়ে।


জবাই দাও মনের পশু


আত্মত্যাগের উৎসব- হলো কোরবানি, 
গরিবদের দাও না -মাংস অল্প খানি।
ভোগ বিলাস ছেড়ে যে-মনুষ্যত্ব কাম্য,
ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে-গড়ে তুলো সাম্য।

কেহ বড়ো পশু কিনে - করে প্রদর্শন,
অহমিকা মন থেকে -করো বিসর্জন।
কুপ্রবৃত্তি হত্যা করে- উচ্চ করো চিত্ত,
উৎকৃষ্ট কার্য সর্বদা- করে যাও নিত্য।

জবাই দাও মনের -ভিতরের পশু,
ভূমিষ্ঠ হবে সুদৃশ্য  -নবজাত শিশু।
হিংসা বৈরী বলি দিয়ে -জন্ম দাও নীতি,
বন্ধন হবে নির্মাণ -স্বতন্ত্র সম্প্রীতি।

সংসারে সবাই যদি -স্বত্বত্যাগ করে, 
পারস্পরিক সাহায্যে -শক্ত হাতে ধরে।
সুখ গুলো ভাগ করে - ঠেলে দাও ক্ষয়,
সকল ক্ষেত্রে আসবে -নিঃসন্দেহে জয়।

অশিষ্টতা নিষ্ঠুরতা -বীজ  করো ধ্বংস, 
ঈদুল আজহা তত্ত্ব -চেতনার অংশ।
ওহে জাতি এসো তবে -লোভ ত্যাজ্য করি,
পুনর্জন্ম নিয়ে মোরা-মর্ম শুদ্ধ গড়ি।


হত্যা : কৌশিক গাঙ্গুলি



আর কতো রক্ত ঝরাবে ? 
আর কতো স্বপ্নকে 
হত্যা করবে ? 
ধর্মের পবিত্র আঙ্গিনায় 
সন্ত্রাসের বিভিষীকা কেনো ? 
ভারসাম্যহীনতায় বেড়ে যায় 
বোধহীনতার অসুখ । 
প্রতিবাদকে এতো ভয় , তাই 
বুলেটবৃষ্টি অবিরত । 
তবু কবিতা লেখা হবে 
গাওয়া হবে গান , শব্দ অক্ষরে 
বজ্রপাত কাঁপিয়ে দিচ্ছে 
বকধার্মিকদের পদচালনা , 
তাই প্রতিশোধ নাকি বা 
আত্মরক্ষার যুদ্ধে রক্ত 
ঝরে পড়ে বিবেকের , 
স্বপ্নকে নিখোঁজ করে পালিয়ে 
যায় আততায়ীরা - 
তবু শেষ হবেনা অন্ধকারের 
সঙ্গে অক্ষরের লড়াই ...
শব্দরা অমরত্ব পাবে , 
আর কতো রক্ত ঝরাবে ? 
আর কতো স্বপ্নকে হত্যা 
করবে তোমরা ?

অমানুষের গল্প:রেজাউল করিম রোমেল


নাম মোঃ রকি হাসান। সবাই রকি নামে চেনে। এবং রকি নামে ডাকে। রকির শিশুকাল কেটেছে ঢাকার কোন এক বস্তিতে তার খালার বাড়িতে। শিশু বয়সে রকি দেখত চার পাঁচ জন লোক তার খালা খালুর কাছ থেকে টাকা নিয়ে যেত। যদি খালা খালু ওই চার পাঁচ জন লোক কে টাকা না দিত তাহলে মারধর করতো। জোর করে টাকা নিয়ে যেত। টাকা না পেলে ঘরের জিনিসপত্র নিয়ে যেত। আর বলতো,
“ আসলাম ভায়ের আস্তানায় টাকা দিয়া তর ঘরের জিনিস পততর লইয়া আইছ। ” 
শুধু যে রকির খালা খালুর সাথে এমন ব্যবহার করতো তা নয়। লোকগুলো বস্তির সবার কাছ থেকেই টাকা নিত। আর টাকা না দিলে মারধর করতো। জোর করে বাড়ির জিনিসপত্র নিয়ে যেত।
আসলাম ভায়ের কথা শুনলে বস্তির সবাই ভয় পেত।
রকি দু একবার দেখেছে আসলাম ভাই-কে। সাদা পাগড়ি, সাদা পাঞ্জাবি, সাদা লুঙ্গি এবং পায়ে থাকতো সাদা জুতো। রকি যে কয়দিন আসলাম ভাই-কে দেখেছে সাদা পোশাকেই দেখেছে। রকি তার খালার কাছে ভাত চায়লে মাঝে মধ্যে খালা খুব মারধর করতো। তাই সে সবসময় স্বপ্ন দেখতো সেও একদিন আসলাম ভাই হবে। কারণ আসলাম ভাই হতে পারলে সবাই তাকে ভয় পাবে। ভাত খেতে চায়লে তার খালা তাকে আর মারধর করবে না। রকির খালু ঢাকা শহরে রিক্সা চালায়। আর খালা মানুষের বাড়িতে কাজ করে। খালার দুই ছেলে এক মেয়ে। রকি তার খালাতো ভাই বোনদের থেকে বয়সে বড়। রকির জন্মের আগে রকির বাবা নিখোঁজ হয়। আর মা রকির জন্মের কিছুদিন পর এক অজানা রোগে মারা যায়। এরপর থেকে সে খালার বাড়িতেই থাকে।
রকি সাত আট বছর বয়স থেকে চায়ের দোকানে কাজ করতো। তৈরী করা গরম চা বিভিন্ন দোকানে বা অফিস আদালতে নিয়ে যেত এবং চা খাওয়ার পর রকি খালি চায়ের কাপ নিয়ে আসত। চায়ের দোকানে কাজ করার সময় সাপ্তাহিক যে টাকাটা পেত সেটা তার খালু এসে নিয়ে যেত। রকি তার পারিশ্রমিকের একটি টাকাও কোনো দিন হাতে পেত না। মানুষের কাছে চা পৌছে দেওয়ার সময় অনেকেই অনেক আজে বাজে কথা বলতো। কেউ গালাগালি দিত, মারধর করতো। অনেকে বলতো -
“ এই, চা আনতে এতো দেরি হয় ক্যান? ”
কেউ বলতো -
“ এই পিচ্চি চা এতো ঠান্ডা ক্যান? ”
একদিন এক গাড়ির গ্যারেজের মালিকের চা পৌছে দিতে দেরি হওয়ায় সে রেগে গিয়ে রকি-কে বললো -
“ হেই পিচ্চি চা আনতে এতো দেরি হয় ক্যান? এতো দেরি হয় ক্যান? এই কান ধর, কান ধর। ”
লোকটা খুব চিৎকার করে রকি-কে এই কথাগুলো বলতে লাগল। আর রকি লোকটার কথামত কান ধরে দাঁড়িয়ে থাকল। তারপর গাড়ির গ্যারেজের মালিক চায়ে চুমুক দিয়ে বললো - 
“ এই চায়ে এতো চিনি দিছোছ ক্যা? এই; এইডা কি চা বানায়ছোছ? ”
রকি বললো - 
“ চা তো আমি বানাই নাই ভাই। রবিউল ভাই চা বানায়ছে। ”
লোকটা আরো ক্ষেপে গিয়ে বললো -
“ তুই আমার মুখে মুখে তর্ক করছ। এদিক আয়, এদিক আয়। ” 
লোকটি রকি-কে তার কাছে ডেকে নিয়ে বললো -
“ তোর চা এতো ঠান্ডা ক্যা। ”
কথাটা বলতে বলতে লোকটি তার হাতে থাকা গরম চা রকির মাথায় ঢেলে দিল। তারপর বললো -
“ যা ভাগ। তোর চায়ের কোনো টাকা হইব না। ”
রকি কাঁদতে কাঁদতে চায়ের কাপ নিয়ে চলে যেতে লাগল। হটাৎ-ই তার চোখে পড়ল একটা মোটা এবং লম্বা রড। রকি রডটা উঠিয়ে ঘুরে দাঁড়াল। তারপর দৌড়ে গিয়ে গাড়ির গ্যারেজের মালিকের মাথায় জোরে বেশ কয়েকটা আঘাত করল। ফলে লোকটা মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। মাথায় হাত দিয়ে দেখল তার মাথা দিয়ে রক্ত ঝরছে। সাথে সাথে সে চিৎকার করে বললো - 
“ এই ক্যাডা আছোছ ওই পিচ্চিডারে ধর। ও আমার মাথা ফাডাইয়া দিছে। ”
রকি কি করবে ঠিক বুঝে উঠতে পারছিল না। সে ডানে বামে দু একবার তাকিয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করল।আর রকির পিছনে গ্যারেজের কর্মচারীরা দৌড়াতে লাগল তাকে ধরার জন্য। কিন্তু তাকে ধরতে পারল না। তারপর ওইদিন রাত নয়টার দিকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ পোস্তগোলা ব্রিজের নিচে বসে ছিল। সে বাড়ি ফিরবে কি করে বুঝতে পারছে না। সারাদিন কিছুই খাওয়া হয়নি। হটৎ-ই সে দেখল চার পাঁচ জন লোক দুজন লোককে ঘিরে ধরেছে আর বলছে -
“ এই যা আছে তাড়াতাড়ি দিয়া দে। ”  
রকি বুঝতে পারল চার পাঁচ জন লোক যারা দুই জন লোককে ঘিরে ধরেছে তারা ছিনতাইকারী। লোকগুলো ছিনতাই করে যাওয়ার সময় দেখল অন্ধকারের ভিতরে একটি ছেলে  বসে আছে। লোকগুলোার ভেতর থেকে একজন বললো,
“ ওই দ্যাখ। ওইখানে একটা বাচ্চা পোলা বইয়া রইছে না? চলতো গিয়া দেহি! ”
 রকির কাছে গিয়ে বললো,
“ এই তুই ক্যাডারে? এতো রাতে এইহানে কি করছ? ”
ছিনতাইকারী লোকগুলোর মধ্যে আর একজন বললো,
“ ভাই এই পোলাডারে আমি চিনি। আমাগো পাশের বস্তিতে থাহে। নাম রকি। আইজ ওই পাড়ার গ্যারেজের মালিকের মাথা ফাটাইয়া দিয়া এইহানে বইসা রইছে। ”
“ কছ কি? তুই এইটুক একখান পিচ্চি পোলা হইয়া গ্যারেজের মালিকের মাথা ফাটাইয়া দিছোছ? চল আমাগো লগে চল। ওই ওরে আমাগো লগে লইয়া আয়। ”
লোকগুলো রকিকে আরমান ভায়ের আস্তানায় নিয়ে গেল। রকি আরমান ভাই-কে দেখল এবং মনে মনে বলতে লাগল তাহলে এই সেই আরমান ভাই। যার নাম শুনলে সবাই ভয় পায়। লোকটি দেখতে কালো। কালো গোঁফ। সাদা পোশাক পড়া। একটি রাজকীয় চেয়ারে পায়ের উপর পা তুলে বসে সিগারেটে টান দিয়ে ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে বললো,
“ কি রে কাজ হইছে ঠিক মতন? ”
ছিনতাইকারী লোকগুলোর মধ্য থেকে সাইফ বললো,
“ জ্বী ভাই। ”
“ তাইলে টাকা গুলান মানিক্যার কাছে রাইখা যা। কালকা আইছ। ”
হটাৎ করে আরমান ভাই রকির দিকে তাকিয়ে বললো,
“ এই পিচ্চি পোলাডা ক্যাডারে? ”
সাইফ বললো,
“ ভাই এ্যার নাম রকি। এক গ্যারেজ মালিকের মাথা ফাটাইয়া পোস্তগোলা ব্রীজের তলে পালায়য়া ছিল। ”
“ আচ্ছা ঠিক আছে। ওরে রাইখা যা। ”
লোকগুলো রকি-কে আরমান ভায়ের কাছে রেখে চলে গেল। আরমান ভাই রকি-কে ডেকে বললো,
“ এই পোলা তোর নাম কি? ”
“ রকি। ”
“ তুই এক ব্যাটার মাথা ফাটাইয়া দিছোছ? ”
“ হ ”
“ ক্যা? ”
“ হ্যায় আমার মাথায় গরম চা ঢাইলা দিছিল। ”
“ও এই কথা। আচ্ছা ঠিক আছে তুই অহুন থ্যাইককা আমার কাছে থাকবি। তরে কেউ কিছু কইতে পারব না। আমার কাছে আয়। আমার পা দুইখান টিইপপা দে। ”
 রকি আরমান ভায়ের কাছে গিয়ে তার পা টিপে দিল।
আরমান ভাই অনেক ক্ষমতাবান। তার মূল কাজ হল মাদক ব্যবসা, অস্ত্র ব্যবসা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, জমি দখল ইত্যাদি। আর তার এই কাজ করার জন্য সে পুলিশকে প্রতিমাসে টাকা দেয়। তার এই অপকর্ম যেন সে ঠিকমত করতে পারে সেজন্য প্রতিমাসে যে টাকা দেয় তা মন্ত্রী লেবেল পযন্ত যায়। তাই তার কাজে কেউ বাঁধা দিতে পারে না। তার লোকবলও অনেক। এজন্য সবাই আরমান ভাইকে ভয় পায়। 
কিছুদিন হল রকির কোনো খোঁজ নেই। রকির খালা খালু দু তিনদিন খুঁজাখুঁজির পর এখন খুঁজাখুঁজি করা বন্ধ করে দিয়েছে। তারা ভেবেছে রকি হয়তো কোথাও চলে গিয়েছে, আর হয়তো ফিরে আসবে না। হটাৎ একদিন রকি তাদের বস্তিতে এসে হাজির। তার খালা বাড়ি এসে খালাকে ডাকল,
“ খালা, ও খালা তুমি কই? ”
খালা ঘর থেকে বেরিয়ে চিৎকার করে বললো,
“ রকি, তুই এতোদিন কই আছিলি? আহাম্মকের পোলা আহাম্মক। তুই বাপের বয়সি একজন মানুষের মাথা ফাটাইছোছ। ও ব্যাটা তোরে পাইলে মাইরা ফালাইব। ”
“ খালা তুমি আস্তে কথা কও, বেশি চেঁচাইয়ো না। আমি অহন ওই গ্যারেজের মালিকের লগে কথা কইয়া আইলাম। আমি আরমান ভায়ের লগে কাম করি। এহন আমি তার সহকারী। আরমান ভাই ওই গ্যারেজের মালিক ব্যাটার লগে আমার ঝগড়া বিবাদ মিমাংসা কইরা দিছে। কিছু বুঝছো? ”
খালা চোখে ভয় নিয়ে মুখে হালকা হাসি দিয়ে বললো,
“ হ...   হ...  হ... বাবা ভাল আছি। আয়, বয়, ভাত খাইয়া যা। ”
খালার কথামত রকি খেতে বসে গেল। খালা তাকে অনেক যত্ন করে খাওয়াল। আর আস্তে আস্তে রকির কানের কাছে গিয়ে বললো,
“ আমাগো ব্যাপারটা দেহিছ। আরমান ভাই-রে কইবি আমাগো কাছ থেইকা যেন চাঁদা না লয়। ”
“ আচ্ছা কমুনে। ”
রকি মনে মনে ভাবতে লাগল মাস দেড়েক আগে সে খালার কাছে ভাত খেতে চাইলে বকাবকি করতো। অনেক দিন ছিল ভাত খেতে দিত না। আজ সেই খালা তাকে যতœ করে ভাত খেতে দিচ্ছে। সে যদি আরমান ভায়ের মত হতে পারে তাহলে শুধু তার খালা কেন সবাই তাকে ভয় পাবে।
রকি আরমান ভায়ের কাছে থেকে অনেক অবৈধ কাজ করতো। ছিনতাই, অবৈধ মালপত্র আনা নেওয়া, মাদক দ্রব্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়া এবং নিয়ে আসা ইত্যাদি কাজ করতো। এসব কাজ করতে গিয়ে রকি অনেক সময় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে জেলও খেটেছে। আরমান ভায়ের লোক হওয়ার কারনে জেল হাজত রকিকে আটকে রাখতে পারেনি। আরমান ভায়ের নির্দেশে রকি অনেক মানুষও খুন করেছে।
দেখতে দেখতে বার তেরটা বছর কেটে গেল। রকি এখন বয়সে তরুণ। এবং আরমান ভায়ের একজন বিশ্বস্ত লোক। ইদানিং আরমান ভায়ের একজন প্রতিদ্বন্দী তৈরী হয়েছে। নাম জাহাঙ্গীর। আর তাই আরমান ভাই রকি-কে বললো সে যেন জাহাঙ্গীরকে খুন করে । যাতে আরমান ভায়ের রাস্তা পরিস্কার হয়ে যায়। এবং সে যেন আগের মত তার কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারে। রকি একদিন সুযোগ বুঝে জাহাঙ্গীরকে গুলি করে হত্যা করার চেষ্টা করল। কিন্তু রকি জাহাঙ্গীরকে হত্যা করতে পারল না। রকি যখন গুলি চালাল তখন গুলিটা জাহাঙ্গীরের হাতে লাগল। তারপর জাহাঙ্গীরের সাথে থাকা লোকজন রকি-কে ধরে ফেললো। এবং জাহাঙ্গীরের আস্তানায় নিয়ে গেল।
তারপর জাহাঙ্গীর ভাই রকিকে বললো,
“ আমারে মারোনের ল্যাইগা আরমান ভাই তোমারে কত টাকা দিছে? ”
রকি জাহাঙ্গীর ভায়ের কথার কোনো উত্তর দিল না। তখন জাহাঙ্গীর ভাই রেগে গিয়ে রকির মুখে জোরে একটা চড় দিয়ে বললো,
“ ঠিক ঠিক উত্তর দে। না হইলে কিন্তু তরে মাইরা ফালামু। ”
রকি বললো,
“ হ টাহা দেয় ”
“ কত টাহা দেয়? ক। না হইলে কিন্তু তরে মাইরা হালামু। ”
“ এক একটা মানুষ খুন করতে কখনো এক লাখ আবার কখনো দেড় লাখ টাকা দেয়। ”
“ আমারে মারোনের লাইগা আরমান তরে কত টাকা দিতে চায়ছে? ”
“ আমারে কিছু বলে নাই। ”
“ তোর আরমান ভাই তোদের মত রকির ঘাড়ের উপর হাত দিয়া আজ কোটি কোটি টাকার মালিক। বাড়ি করছে গাড়ি করছে। আর তুই কি করছোছ? তোর কি আরমান ভায়ের মত হইতে ইচ্ছা করে না? আরমান ভাই বাঁইচা  থাকলে তুই তার জায়গা ক্যামনে দখল লইবি? তুই আরমান রে মাইরা ফালা। তাইলে আরমান ভায়ের এলাকা তোর দখলে চইলা আইব। আর তোরে আমি হেল্প করুম।এই নে একলাখ টাকা। আরমান ভাইরে মারতে পারলে আমি তরে পাঁচ লাখ টাকা দিমু। এই ল ধর। ”
রকি জাহাঙ্গীর ভায়ের কাছ থেকে একলাখ টাকা নিয়ে সোজা আরমান ভায়ের আস্তানায় গিয়ে সরাসরি আরমান ভায়ের রুমে ঢুকে রুমের দরজা বন্ধ করে দিল।
আরমান ভাই বললো,
“ কিরে এতো ব্যস্ত ক্যান? কামডা করতে পারছোছ? জাহাঙ্গীররে মাইরা হালাইতে পারছোছ? 
রকি বললো,
“ না ”
“ তাইলে? ”
“ আমি আপনারে মারতে আইছি। ”
আরমান ভাই বিস্ময়ের চোখে রকির দিকে তাকিয়ে বললো,
“ এই তুই কি কছ? তুই কছ কি? ”
“ হ। আমি আপনারে মারতেই আইছি। আপনারে মারতে পারলে জাহাঙ্গীর ভাই আমারে পাঁচ লাখ টাকা দিবো কইছে। সে আমারে এক লাখ টাকা আগেই দিছে। আমার জীবনে একটাই স্বপ্ন আমিও আপনার মতন আরমান ভাই হইতে চাই। আপনার জায়গা দখল করতে জাহাঙ্গীর ভাই আমারে সাহায্য করব। ভাই আমারে মাফ কইরা দিয়েন। ”
আরমান ভাই এ কথাগুলো শুনে চোখ দুটো বড় বড় করে মুখ হা করে রকির দিকে তাকিয়ে থাকল। আর রকি তার মাযা থেকে পিস্তলটা বের করে আরমান ভায়ের বুকে দুই তিনটা গুলি করল। রুমের বাইরে থাকা লোকজন গুলির শব্দ আর চিৎকার শুনে আরমান ভায়ের রুমে এসে ঢুকল। আরমান ভায়ের রক্তাক্ত অবস্থায় মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখে সবাই অবাক হল।
আরমান ভাই বললো,
“ দাড়াইয়া কি দ্যাহছ? রকিরে ধর। ও আমারে গুলি করছে। ”
রকি অবস্থা বুঝে আরমান ভায়ের ঘরের দরজা খুলে দ্রুত পালানোর চেষ্টা করল। আর আরমান ভায়ের লোকেরা রকিকে ধরার জন্য তার পেছনে দৌড়াতে লাগল। আর চিৎকার করে বলতে লাগল,
“ রকিরে ধর। ও আরমান ভাইরে গুলি করছে। ”
একটা সময় লোকগুলো রকিকে উদ্দেশ্য করে গুলি করতে শুরু করল। তাদের করা দুটো গুলির একটা রকির পায়ে আর একটা পিঠে লাগল। এবং সাথে সাথে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে যন্ত্রনায় ছটফট করে চিৎকার করতে লাগল। লোকগুলো রকির কাছে আসল। তারপর আরমান ভাইকে ফোন দিল। আরমান ভাই বললো,
“ ওরে গুলি কইরা মাইরা ফালা। আর তাড়াতাড়ি আয়। আমার শরীর দিয়া অনেক রক্ত ঝরতাছে। আমারে হাসপাতালে লইয়া চল। ”
“ জ্বী ভাই, আইতাছি। ”
কথাটা বলে লোকগুলোর ভিতরে একজন রকির মাথার উপরে পিস্তল ধরল। যখনিই গুলি করবে ঠিক তখন রাস্তা দিয়ে একটি গাড়ি হর্ণ বাজাতে বাজাতে আসতে থাকে। লোকগুলো দেখল একটা পুলিশের গাড়ি হর্ণ বাজাতে বাজাতে তাদের দিকেই আসছে। তখন তারা রকিকে গুলি না করে দ্রুত দৌড়ে পালালো।
এরপর তিনদিন পার হল। আরমান ভাই এবং রকি দুজনেই হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। আরমান ভায়ের লোক দেখানো কিছু আইনসম্মত ব্যবসা আছে এবং সে রাজনীতির সাথে জড়িত। আর তাই বিভিন্ন পত্রিকায় খবর এলো বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সমাজসেবক ও রাজনীতিবীদ আশিকুর জামান আরমান ওরফে আরমান ভাই নিজের দেহরক্ষী দ্বারা গুলিবিদ্ধ। ধরনা করা হচ্ছে আরমান ভাই তার কোনো শত্রু পক্ষের স্বীকার হয়েছেন। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছেন। আরমান ভায়ের উপর যে গুলি চালিয়েছিল সেই দেহরক্ষী রকিকেও আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার  করা হয়েছে। বর্তমানে সে পুলিশ হেফাজতে আছে। 
রকি পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালের বিছানায় ব্যাথায় ছটফট করছে আর মনে মনে ভাবছে সে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আরমান ভায়ের মত ক্ষমতাবান হয়ে উঠবে। এবং আরমান ভায়ের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না। কারণ জাহাঙ্গীর ভাই তাকে সবধরনের সহযোগীতা করবে। জাহাঙ্গীর ভাই তাকে নিজ মুখে বলেছে। ছোট বেলা থেকে যে স্বপ্ন বুকে লালন করে বড় হয়েছে অল্প কিছু দিনের মধ্যে তা বাস্তবে রূপ নিতে যাচ্ছে। কিছুদিন পর সে-ই হবে ক্ষমতাবান রকি ভাই।

-------------------------------------------------------------
রেজাউল করিম রোমেল। 
চাঁচড়া, রায়পাড়া, 
ইসমাইল কলোনি, 
যশোর, বাংলাদেশ। 
মোবাইল -০১৭৬০-৮১৩৪৮৪।

সোমবার, ১৩ নভেম্বর, ২০২৩

বাদল রায় স্বাধীন এর এক গুচ্ছ কবিতা

 





পাগলও আজ পুলিশ চিনে

                      


সারা বাংলায় জ্বলছে আগুন,কে জ্বালালো শুনি,

মন্দির ভাঙ্গার বাড়ছে সংখ্যা, শুয়ে শুয়ে গুনি।

কারা এসব কাজ করেছে,কে ভেঙ্গেছে মুর্তি

কারা এসব দেখে শুনে, করছে আবার ফুর্তি।

অবমাননার দায়টা কার,বলবে কে সে সত্য

ক্ষমতায় আসীন হওয়ার,এটা কি সে পথ্য।

একের দোষ অন্যের ঘাঁড়ে, নেয়না কেউ তার দায়

শেষ পর্যন্ত দোষ চাপে, নির্যাতিতের গায়।

দোষের উপর দোষ দিয়ে সব,ছড়ায় আগুন আরো

ধর্ম নিয়ে রাজনীতি টার,সময় পোয়া বারো।

অবশেষে সামনে আসলো, সত্যি যে কে দোষী

কিন্তু তাকে বাঁচিয়ে নেওয়ার,চিন্তা সবাই পুষি।

কেউবা বলে পাগল তাকে, কেউবা ভবঘুরে,

সে পাগলটার খোঁজ মিললোনা,কেন রংপুরে?

পালানোটা দরকার বুঝলো,সে পাগলটা আবার

দুই দিনে সে চলে গেলো,সূদুর কক্সবাজার।

সে পাগলের মিটিং দেখলো, সারা বিশ্ব বাসী

মাজার থেকে কোরআন রাখলো,মন্দিরেতে আসি।

ঘর পোড়ানো মানুষ গুলো, চাইলোনা তার ফাঁসি

মনে মনে সে পাগলকে, সবাই ভালোবাসি?

মনে হলো সে  পাগলের, খুশি সবাই কাজে

সে প্রশ্নটা সবাই শুনে,বলবে আমায় বাজে।

সত্যি হলো সে পাগলকে,সবাই বাসে ভালো

হয়তো আবার মিছিল হবে, ইকবাল এগিয়ে চলো।

আমরা সবাই তোমার সাথে,ভয় পেইওনা ভাই,

তুমি হলে ধার্মিক এমন,তুলনা যার নাই।

মাঝে মাঝে এমন পাগল,সবার চাওয়া হবে

ক্ষমতায় টেকার পথটা,সুগম হবে তবে।


জামাই ষষ্টি, সুখের স্মৃতি

                   


চৌদ্দ বছর শশুড় বাড়ি, হয়নি আমার যাওয়া।

তাইতো হয়নি তাদের বাড়ি, ভালো মন্দ খাওয়া।।


ভারত এসে পেলাম এবার, শশুড় বাড়ির স্বাদ।

সত্যি কভূ ভালোবাসা,পাইনি এমন নিখাদ।। 


জামাই ষষ্টির দিনে হঠাৎ,জামাই সাজা হলো।

পাঁঠার মাংস দধি পায়েশ,অনেক খাবার এলো।।


মাছ ভাজি, মাছ রান্না, সব্জী আবার ডাল।

আম,লিচু চিংড়ি ভাজায়,ডাইনিং হলো লাল।। 


পাবদা মাছের দোঁ পেঁয়াজা,রুই মাছের ঝোল।

আনন্দেতে কান্না এলো,হারিয়ে মুখের বোল।।


কচি লাউয়ের সব্জী এলো,এলো বেগুন ভাজা।

বিয়ে করার এতো পরে,পেলাম বিয়ের মজা।।


এমন সন্মান দেয়নি আপন,শশুড় কিংবা শালা।

মনের মাঝে ছিলো তাই,অপ্রাপ্তির জ্বালা।।


আজকে এমন বিরল মান,যারা আমায় দিলো।

তাদের ভুলা সম্ভব কভূ ,মৃত্যু ছাড়া বলো ? 


তাদের কাছে জিবন ভর,থাকবো ঋনী হয়ে।

বাকি জিবন সুখ স্মৃতিটা, কাটাবো আমি বয়ে।।


মায়ের পূঁজোয় দেবি তুষ্ট 

             


মদ্যপানে মাতাল হয়,মায়ের পূঁজো করতে,

খবর শুনি আবার কেউ,নেশা করে মরতে।


জিবন্ত মাকে খাবার দেয়না,তাড়ায় দূর দূর,

দেবী মায়ের জন্য কাঁদে,নরাধম সে অসুর।


শক্তির পূজা করতে নাকি,শক্তি যোগায় মদ,

বিসর্জনে বুকটা ভাসায়,যে ছেলেটা বদ।


মাকে দেয়না ঔষধ পথ্য,দেবির জন্য ঢালি,

জন্মদাত্রী মাকে দেয়,কথায় কথায় গালি।


মাকে রাখে বিছানাহীন ,দেবির জন্য আসন,

লুটিয়ে পড়ে প্রনাম করে,নিজের মাকে শাসন।


দেবিকে কয় মাগো তুমি,বছর ধরে থাকো,

বউকে বলে বুড়িটাকে,আলগা ঘরে রাখো।


মায়ের জন্য পথ্য কিনতে,টাকার অভাব পরে,

দেবির জন্য লক্ষ খরচ,সে ছেলেটা করে।


দেবির চাওয়া তুলসি পাতা, নয়তো পাতা বেল 

তবু আমরা ঢালি দেবীর, তেলা মাথায় তেল।


আসল মাকে কষ্ট দিয়ে,করলে দেবি পূজা,

নরকে তুই নিশ্চিত যাবি,হিসাব অতি সোজা।


জ্যান্ত মায়ের পূজা করো,সময় থাকতে তাই,

ইহকাল  আর পরকালে,শান্তি পাবি ভাই।


যৌবনের এপিট ওপিট

         


ঝুম ঝুমিয়ে বৃষ্টি পড়ে, আষাঢ় শ্রাবন মাসে,

নদী তখন যৌবন পায়,দুর্বার হয়ে হাসে।

সে হাসি যে তীব্র অনেক, ভাঙ্গে নদীর কূল

হঠাৎ পাওয়া অহংকারে, করে অনেক ভুল।

নিজে ভাঙ্গে নিজের কুল, ভাবে হচ্ছি প্রসার

বর্ষা গেলে পানি শুন্য, সবিই যেন অসার।

সবাই তখন সে নদীকে,মরা নদী ডাকে

পানি মাছ সবি শুন্য, হাটু জল থাকে। 


প্রবাহমান নদী কিন্তু,সমান তালে চলে

অনন্ত যৌবনা সবাই,সে নদীকে বলে। 


মানুষেরও যৌবন শক্তির,সত্যিই এতো মিল

নিজেই নিজের পৃথীবিকে, করে তোলে নীল।

ভোগ বিলাসে মত্ত হয়ে,নিজের ক্ষতি করে

কিছু দিন পর রোগ ব্যাধিতে,ঝিমিয়ে সে পড়ে।

হঠাৎ করে জ্বলে উঠে, হঠাৎ থেমে যায়

জ্বরাজীর্ন রোগী হয়, উঠার শক্তি নাই।


অন্য দিকে সে যৌবনকে, কাজে লাগায় চতুর

সীমার মধ্যে করে সবি, হয়না কভু ফতুর।

দেশ ও জাতী সে যুবককে,স্যালুট সবাই করে

মৃত্যর পরও ইতিহাসে, থাকে স্বর্নাক্ষরে।


যৌবনটা তাই কাজে লাগাও,হিসাব করে চলো

বৃদ্ধ কালটা সুখের হবে, তোমায় করবে ফলো।


চরিত্রহীন  বলোনা

                 


মেয়ে তোমার বাড়ি কোথায়, ঠিকানাটা বলো,

জানতে বড়ো ইচ্ছে করে, কোন পথ দিয়ে চলো।


জানলে গিয়ে সে পথ দিয়ে, করতাম তোমায় টিজ,

ছবি দেখেই বুনলো মনে, ভালোবাসার বীজ।


অঙ্গে এতো রুপ কেন গো, এতো সুন্দর কেনো,

শুক্রবারে ছুটির দিনে, বানিয়েছে যেনো।


এতো সময় করলো স্রষ্টা, তোমার পিছে ব্যায়,

অন্য মেয়ের প্রতি এটা, হয়েছে  অন্যায়।


লজ্জাহীন আর বেহায়ার, তকমা দাওনা যতো,

তোমার জন্য যুদ্ধ করে, হবো আহত।


ভীমরতিও বলুক লোকে, কিবা আসে যায়,

চোখ ফেরাতে পারিনাগো, করার কিছু নাই।


তুমি এবং স্রষ্টা দায়ী, কেন সুন্দর হলে,

আমায় কেন গাল দেবেগো, চরিত্রহীন বলে?


তোমার সুন্দর বদলে গেলে, ঘুরবোনা আর পিছে,

তাইতো আমায় দোষ দিওনা, শুধু মিছে মিছে।


তোমার সুন্দর বদলে গেলে, মন বদলাবে আমার,

নয়তো আমায় বলবেনাগো, ছোট লোক আর চামার।


তাইতো আমি দিলাম আজি, সে সুন্দরের ব্যাখ্যা,

এরপরও কি আমায় দেবে, চরিত্রহীন আখ্যা?

এ কোন স্বাধীনতা: প্রবীর কুমার চৌধুরী


 


এ দেশে জন্ম আমার এদেশেই বড়,

এদেশে জন্মাবধি ভয়েই জড়োসড়ো ।

এদেশের নাকি আরেক নাম সূর্যের দেশ-

এদেশেই ক্ষয়ে ক্ষয়ে কত যৌবন শেষ ।


এ নিকষ অন্ধকারে কে জ্বালাবে আলো ?

গণতন্ত্রের নিচেই দেখি জমাট বাঁধা কালো ।

স্বাধীনতায় ধনতন্ত্রের একছত্র অধিকার ,

গরিবী হটাও বৃথা স্লোগান,বাড়ছে হাহাকার ।


লুটেপুটে খাচ্ছে দেখ যত ক্ষমতাবান 

মিথ্যা কথার নীরব শ্রোতা ,শাসনে ভগবান ।

স্বাধীনতার চোখে জল,প্রজাতন্ত্র অজানা,

সর্বজাতির ভারতবর্ষ অনেকেই মানেনা ।


বাপ,ঠাকুরদার ভারতবর্ষ স্বপ্নের এক দেশ ,

আজ দেখি দৈন্যদশা, বর্বরতা, উৎশৃঙ্খলতায় একশেষ ।

মানুষে মানুষে এত বিভেদ, এত অন্যায় কোথায় আছে ?

এখন শুধু ক্ষমতা, ঘুষ - বিবেক,মনুষ্যত্ব গেছে।


পঞ্চাশের প্রজাতন্ত্র মানুষকে পুরস্কার ,সম্মান দিল,

আর সংবিধানে মানুষের অধিকার,নাগরিকত্ব পেল।

আজ শুনি হায় প্রজাতন্ত্র মানুষের অজানা ,

দিকে দিকে রক্তের হলি প্রতিবাদে তবু  মানা ।


সংবিধানে ন্যায়বিচার,স্বাধীনতা,সমতার কথা আছে,

এখন শুধুই মৃত্যুযন্ত্রনা ন্যায়বিচার কার কাছে?

বাহুবলির প্রতাপে রাত ঘুমহীন ,প্রাণ ওষ্ঠাগত-

ওরাই সমাজের রূপকার আর আমরা শরণাগত ।


এই স্বাধীনতাই কি চেয়েছিল ,এর জন্যই আত্মবলিদান ?

এ স্বাধীনতা দেয় না ভাত ,দেয় না সম্মান।

ফিরিয়ে দাও সেই ভারতবর্ষ যেথায় একতার হাসি-

ছিল শত দুঃখেও খুশির সকাল, ছিল বোধ ভারতবাসী।



গাজনের গান :কৌশিক গাঙ্গুলি



নেতারা ডিগবাজি খান
এ দল থেকে ও দলে,
গুন্ডারা কাঁসর বাজায়
 চামচেরা দেয় হরিবোল।
জনতা ছাগলের বাচ্চার মতন
ঠ্যাং তুলে নাচে‌।
দেশ লুঠ হচ্ছে,
তাতে তোমার কি, তাতে আমার কি ?
পাবলিকের আবার সম্মান, বুদ্ধিজীবীদের আবার অপমান !
 ছড়ানো ছেটানো দানে আমরা মুগ্ধ বেচারা ,
দেশে স্বৈরতন্ত্র চলছে গণতন্ত্রের মুখোশ পরে ।
দুর্নীতিতে ধরা পূর্ণ, তবুও আমরা উৎসবে মাতি,
সন্ত্রাসে সন্ত্রাসে বাক স্বাধীনতা মৃত্যু গহবরে ,
তবুও আমাদের বেঁচে থাকতে হয় ।
অম্বলে কম্বল চাপাই বিনা শীতে, 
গাজনের গান গায় নিতাই পাগল ।
নেতারা ডিগবাজি খান  এ দল থেকে ওদলে ।