পথ চলা শুরু ছিল আজ থেকেই সময়টা সালটা 2017 ,
প্রথমে একটা সাধারণ page হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল নিকোটিন ওয়েব ম্যাগ ,খুব তাড়াতাড়ি অনেক জনপ্রিয়ও ছিল page টি ,তারপর একদিন হঠাৎ page টি হ্যাক হয়ে যায় ,তারপর pageটিকে মুছে দেওয়া হয় ফেসবুক থেকে । নাঃ সেদিন খুব কষ্ট হয়নি আমার,রাগও হয়নি,শুধুই অভিমান পুষে রাখছিলাম ভিতর ভিতর ,কারণ আমি জানতাম আমার "নিকোটিন"কে ওতো সহজে মুছে দেওয়া যায় না ,যে আসক্তি একবার লাগে সে আসক্তি থেকে বেরোনো কারো হিম্মত থাকে না ।
তারপর ব্লগ কি করে বানাতে হয় শিখলাম ,প্রায় একমাস লেগে গেল। হাত পেতে পেতে লেখা চাইতে শুরু করলাম , যাদের লেখা আমার ভীষণ ভালো লাগতো তাদের লেখা দেওয়ার জন্য বারবার জ্বালাতাম ,বিরক্ত করতাম ...তখন সবে আমার তৃতীয় বর্ষ কলেজে ,পড়ার চাপও প্রচুর ,সেমিনার ,প্রোজেক্ট এত প্রতিমাসে এক্সাম তো লেগেই আছে ,আমি সব ছেড়ে এডিট শিখলাম ,ছবি আঁকা শিখলাম ...ব্লগ টা কি কতে আরো ভালো বানানো যায় রোজ পড়তাম ব্লগ নিয়ে তখন।
লেখা চাইতে গিয়েও হেনস্তা হয়েছি অনেকবার,বারবার প্রশ্ন ছুড়ে মারত সবাই ,কি ম্যাগাজিন ? কত টাকা লাগবে লেখা দিতে ? কেন লেখা দেবো ? ইত্যাদি ইত্যাদি... পাগল হয়ে যেতাম প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে এখনও হৈ।
তারপর কবে প্রকাশ হবে ? কেন আজ প্রকাশ হচ্ছে না ?
চতুর্থ বর্ষ উঠে আরো চাপ বেড়ে গেল কলেজে প্রোজেক্ট নিয়ে কাজ করতে হবে ,সময় ছয় মাস ,ল্যাবরেটরি তে রোজ রোজ গিয়ে ল্যাবে কাজ করা ,তবুও "নিকোটিন "এর জন্য আলাদা করে সময় বার করে রাখতাম ,রাতে ঘুমাতাম না ।
আস্তে আস্তে পাঁচশো কবি/লেখক নিয়ে ও 35 হাজার পাঠক আজ মৃতপ্রায় নিকোটিন...
অনেক কাজ করবো বলে ভেবে রেখেছিলাম ,টিম বানালাম ,কিন্তু সব কাজ আমাকেই করতে হতো ,কেউ একটুও হেল্প করার জন্য এগিয়ে আসেনি ,তারপর থেকে একা কাজ করে যাচ্ছি ,যখন কলেজ শেষ হলো সেই সময়টা একটা লম্বা ছুটি পেলাম অনেক উদ্যোগ আস্তে আস্তে নিতে শুরু করলাম ...কিন্তু কথা দিয়ে কথা রাখতে পারলাম না ।
তারপর বেকারত্ব টা আস্তে আস্তে ছিঁড়ে খাচ্ছিল ,সেটা ভুলতেই সময়টা "নিকোটিন" এর জন্য চলে যেত । জব পেতে এখানে ওখানে ঘুরতে ঘুরতে একটা জব পেলাম অবশেষে ,জব পাওয়ার আগে ভেবেছিলাম অনেক কিছুই ,কলেজ জীবনের থেকে এই জীবনটা যে কত কঠিন আগে বুঝিনি ,এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি । রোজ অফিস ফেরত ক্লান্ত চোখে রুমে এসে আবার রান্না করা ,খাওয়া ,আর কিছু টাস্ক জাস্ট মরে যাচ্ছে ভিতরের মানুষটা ।
"নিকোটিন" এর জন্য সময় দিতে দিতে একদিন সব হারিয়ে ফেলাম আমি ,এক নাম্বার এর জন্য GPAT কোয়ালিফাই করতে পারলাম না , প্রোজেক্ট টাও সাকসেস হয়নি আমার । কবিতা লেখাও তো কবেই ছেড়ে দিয়ে বসে আছি । যে কবিতা ছাড়া আমি কোনো কিছুই ভাবতাম না একটা সময় ,এখন ঘৃণা হয় নিজেকে ...।
তবুও আশ্বাস দিয়েছি "নিকোটিন" বাঁচবে ...
কিন্তু আমি ব্যর্থ ,এই রোজ ব্যর্থ হয়ে হয়ে এখন অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে।
এবার বলছিলাম বই মেলায় যাবো ছুটি পেলাম না ,#প্রভাতী সংখ্যার টি এখনো সম্পূর্ণ প্রকাশ করতেই পারিনি কথা দিয়ে ।
আজ সকালে night ডিউটি করে ফিরেছি বাস এ উঠে দেখি মোবাইলের রিমাইন্ডার টা বাজছে ,আজ নিকোটিন এর জন্মদিন । অনেক শুভেচ্ছাবার্তা আসছে নোটিফিকেশন এ ।
টানা কুঁড়ি দিন duty ,একটা sunday তেও ছুটি পাইনি ,কাল আবার duty ...,রোজ রোজ মেডিসিন বানাও , quality দেখো ,এই কাজ ।
এখন "responsibility " এর কাছে "কবিতা" (মন ভালো করার ওষুধ) হেরে যায় ,হয়তো আজ এই মেডিসিন না বানালে কাল বা পরশু এর অভাবে কত মানুষের মৃত্যু হবে ,কিংবা বেশি দামে কিনতে হবে ! তাই হেরে যাই এখন এর কাছে । "কবিতা" মনের ওষুধ হলেও প্রাণ বাঁচানোর নয় ।
তাই বলে কি "নিকোটিন" মরে যাবে ?
উত্তর নেই আমার কাছে । তবে যখন কথা দিয়েছি নিকোটিন ছাপা অক্ষরে বেরোবে তবে তা বেরোবেই । শুধু আপনার সঙ্গে থাকবেন যে ভাবে ছিলেন প্রথম থেকেই ...হয়তো কেউই থাকবে না ,থাকে না ...তবুও নিকোটিন মরে গিয়েও বেঁচে উঠুক এই প্রার্থনা টুকু করবেন ।
শুভ জন্মদিন নিকোটিন
শেষ আকুতি আমার
"কথার মাঝে কথা হারায় ,শহর পুড়ছে নিকোটিনে
ভিড়ের মাঝেও হারিয়ে গিয়ে ,আমার চিৎকার কি নেবে চিনে ?"
ধন্যবাদান্তে ,
জ্যো তি র্ম য়
ভালো থাকবেন ,ভালো রাখবেন প্রিয়মানুষটিকে
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন